Pages

Monday, December 30, 2019

Frequently Misused Words

গত তিন বছরে আমার শোনা কিছু শব্দ যেগুলোকে আমি নিয়মিত ভুলভাবে প্রয়োগ হতে দেখেছি সেগুলা লিখব। এই শব্দগুলোর নির্দিষ্ট অর্থ এবং তাৎপর্য আছে। আপনি যখন না বুঝে এই শব্দগুলো ব্যবহার করবেন তখন এই শব্দগুলোর সাথে জড়িত ব্যক্তি এবং কাজগুলোর প্রতি অন্যায় করা হয়। ইংরেজি বর্ণানুক্রমে লিখছি।
1. Autistic:
একজন ব্যক্তি অটিস্টিক মানে তার অটিজম নামের ডেভেলপমেন্ট ডিজর্ডার আছে। এই ডিজর্ডারের কিছু নির্দিষ্ট লক্ষণ আছে। অটিস্টিক শিশুরা সামাজিক যোগাযোগ স্থাপন করতে বেগ পায়, এরা প্রায়ই একই কাজ বারবার করতে পছন্দ করে, শব্দের প্রতি বিভিন্ন মাত্রায় অসহনশীলতা থাকতে পারে এদের। কিন্তু একজন অটিস্টিক ব্যক্তি কখনোই উন্মাদ কিংবা জড়বুদ্ধিসম্পন্ন নন। আপনি যখন বুদ্ধিহীন কিংবা বিচিত্র বুঝাতে কাউকে অটিস্টিক বলে সম্বোধন করেন, তখন আপনার সীমিত জ্ঞান যেমন প্রকাশ পায়, তেমনি অটিস্টিক ব্যক্তিদেরকেও অপমান করা হয়।
2. Depression:
ডিপ্রেশন মানে মন খারাপ না। ডিপ্রেশন একটা মানসিক ডিজর্ডার যেখানে একজন ব্যক্তি স্থায়ীভাবে বিষন্নতা ও শূন্যতাবোধের ভেতর দিয়ে যান। ডিপ্রেশনের মাত্রাভেদে একজন মানুষের দৈনন্দিন জীবন বিভিন্নভাবে অচল হয়ে যেতে পারে।
3. Feminist:
ফেমিনিস্টের বাংলা হচ্ছে নারীবাদী। অনেকে মনে করেন যেসব নারী বড় বড় কথা বলে তারা নারীবাদী, কিংবা যারা নারী অধিকার নিয়ে কথা বলেন তারা নারীবাদী। অনেকে এটাও ভাবেন যে নারীবাদ মানে পুরুষদের ঘৃণা করা। এর সব কটাই ভুল/অসম্পূর্ণ ধারণা। একজন ফেমিনিস্ট ব্যক্তি সকল জেন্ডারের সমতা চান। যেহেতু নারীর প্রতি বৈষম্য থেকে সমতার জন্য লড়াইটা শুরু হয়েছে, সেহেতু এর নাম হয়েছে নারীবাদ। কিন্তু নারীবাদী হতে পারেন নারী, পুরুষ কিংবা ভিন্ন জেন্ডারের যে কেউ। এখানে কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা জেন্ডারের প্রতি কোনোরকম ঘৃণা জড়িত নেই। নারীবাদের শত্রু পুরুষ নয়। নারীবাদের শত্রু হচ্ছে পুরুষতন্ত্র। পুরুষতন্ত্র হচ্ছে একটা সিস্টেম যেখানে নির্ধারিত কিছু নিয়মের মাধ্যমে নারী ও পুরুষের মধ্যে বিভেদ বজায় রাখা হয়। একজন পুরুষও পুরুষতন্ত্রের ভিকটিম হতে পারেন এবং একজন নারীও পুরুষতান্ত্রিক হতে পারেন। পরেরবার যখন কাউকে নারী অধিকার নিয়ে কথা বলতে দেখবেন, আগে যাচাই করে নেবেন তিনি সব জেন্ডারের সমতা চান কি না। সমতা না চাইলে, ঘৃণার কথা বললে তিনি নারীবাদী নন।
4. Introvert:
ইন্ট্রোভার্টের বাংলা হচ্ছে অন্তর্মুখী। এটা কোনো মানসিক বা সামাজিক সমস্যা না। এইটা একটা পারসোনালিটি টাইপ। কিছু মানুষ হৈচৈ পছন্দ করে। কিছু মানুষ চুপচাপ থাকতে পছন্দ করে। যারা চুপচাপ থাকতে, একা থাকতে পছন্দ করে তাদের অনেকেই ইন্ট্রোভার্ট। এটা তাদের ব্যক্তিত্বের অংশ। যার ব্যক্তিত্ব যেমন তাতে সেভাবে গ্রহণ করুন।
5. Narcissist:
ফেসবুকে সেলফি দিয়ে ক্যাপশনে নার্সিসিস্ট লিখে নিজেকে খুব খুউল ভাবছেন? ভাইবেন না। নার্সিসিজম একটা পারসোনালিটি ডিজর্ডার। নার্সিসিস্ট ব্যক্তিরা প্রচণ্ড আত্মকেন্দ্রিক, ঈর্ষাপরায়ণ এবং দাম্ভিক হন। এরা অন্যের প্রতি কোনো সহানুভূতি ধারণ করেন না। আপনি যদি এমন না হয়ে থাকেন, তাহলে শুধু শুধু নিজের প্রতি ভালোবাসাকে নার্সিসিজমের নাম দিয়েন না। নিজের প্রতি ভালোবাসা থাকাটা ভালো ব্যাপার। নার্সিসিজম ভালো ব্যাপার না। আপনি যদি সত্যিই নার্সিসিস্ট হয়ে থাকেন, তাহলে নিজেকে বদলান। এটা গর্ব করার কিছু না।
6. OCD:
পুরো ফর্মটা হচ্ছে অবসেসিভ কমপালসিভ ডিজর্ডার। বাংলায় বলে শুচিবাই। ভীষণ খুঁতখুঁতে হওয়া, বারবার একই কাজ করা ওসিডির কিছু লক্ষ্মণ। কিন্তু খাবার, পোশাক কিংবা অন্যকিছু নিয়ে নির্দিষ্ট পছন্দ/অপছন্দ থাকা মানে এই না যে আপনার ওসিডি আছে। ওসিডি একটা গুরুতর সমস্যা। কথায় কথায় ব্যবহার করে শব্দটাকে খেলো করে দেবেন না।
7. Schizophrenia:
কারো কথা বা কাজ আপনার সাথে মিলছে না বলে তাকে স্কিজোফ্রেনিক বলবেন না, প্লিজ। স্কিজোফ্রেনিয়া একটা ভয়ংকর বাজে মানসিক রোগ। এই রোগে একজন মানুষ অসংলগ্ন চিন্তা করেন, কথা বলেন এবং কাজ করেন। একজন স্কিজোফ্রেনিক ব্যক্তি পরিষ্কারভাবে চিন্তা করতে পারেন না, স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারেন না। আপনি যদি কোনো সত্যিকারের স্কিজোফ্রেনিক ব্যক্তিকে চিনে থাকেন তার প্রতি সহানুভূতিশীল হোন। কারণ মানুষটা নিঃসন্দেহে প্রচণ্ড কষ্টে থাকেন।
8. Secular:
ইদানীং দেখছি সেকুলারিজমকে নাস্তিকতার বিকল্প হিসেবে এবং সেকুলার শব্দটাকে গালি হিসেবে ব্যবহার করেন কেউ কেউ। সেকুলারিজম মানে ধর্মনিরপেক্ষতা। একজন সেকুলার ব্যক্তি কোনো নির্দিষ্ট ধর্মের প্রতি পক্ষপাতিত্ব করেন না। একটা রাষ্ট্র যখন সেকুলার হয়, তার মানে সেই রাষ্ট্রে সকল ধর্ম সমান মর্যাদা পায়। একজন নাস্তিক ব্যক্তিও একটা সেকুলার রাষ্ট্রে নিরাপত্তা ও সম্মান পাওয়ার অধিকার রাখেন। কিন্তু সেকুলারিজম মানে নাস্তিকতা না। আপনি নিজের ধর্ম পালন করে যদি ভিন্ন বিশ্বাস বা অবিশ্বাসের সাথে সহাবস্থান করতে পারেন, তার মানে আপনি সেকুলার ধারার মানুষ।

এমন অপপ্রয়োগের শিকার শব্দ আরো আছে নিশ্চয়ই। ইন্টারনেটের যুগে তথ্য অত্যন্ত সুলভ। কোনো নতুন শব্দ ব্যবহার করার আগে চট করে গুগল করে নিন। তাহলে আপনাকে আর বোকা বোকা কথা বলে বিব্রত হতে হবে না। :)

(এই পোস্টটা প্রথমে ফেসবুকে লিখেছিলাম আমি। সেটা আশাতীত সাড়া পাওয়ায় ব্লগে টুকে রাখলাম, যাতে প্রয়োজনে ভবিষ্যতে খুঁজে পাওয়া সহজ হয়।)

No comments:

Post a Comment