Monday, March 19, 2012

অ্যাম্বিগ্রাম


ড্যান ব্রাউনের কল্যাণে অ্যাম্বিগ্রামের সাথে অনেকেই পরিচিত। Ambigram শব্দটি ambi (উভয়) ও gram (আঁকা) শব্দ দুটির সমন্বয়ে গঠিত। নাম থেকেই এর স্বভাব সম্পর্কে ধারণা করা যায়। অ্যাম্বিগ্রাম হলো টাইপোগ্রাফের একটা বিশেষ পদ্ধতি যার মাধ্যমে একই শব্দকে ভিন্ন ভিন্ন আঙ্গিকে বা ভিন্ন ভিন্ন অর্থে প্রকাশ করা যায়। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে ১৮০ ডিগ্রি ঘোরালেও যে শব্দের রূপ অপরিবর্তিত থাকে তা-ই অ্যাম্বিগ্রাম হিসেবে জনপ্রিয়। যেমন- ambigram শব্দটিরই এই অ্যাম্বিগ্রাম দুটি-

আমার আগ্রহ বাংলা অ্যাম্বিগ্রামে। বাংলা বর্ণমালা বহুমাত্রিক। এতে মাত্রাসহ আর মাত্রাবিহীন বর্ণ যেমন আছে, তেমনি এর আকৃতিবিন্যাসও আলাদা। কারচিহ্নগুলো কখনো সামনে, কখনো নিচে, কখনো উপরে, কখনো নিচে বসে।  অ্যাম্বিগ্রামে যেখানে প্রতিসাম্য (symmetry) মৌলিক বৈশিষ্ট্য, সেখানে বাংলা বর্ণমালা নিয়ে কাজ করাটা বাড়তি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। আর মজাটা সেখানেই। আমার করা পছন্দের কিছু অ্যাম্বিগ্রাম নিয়ে এখানে কথা বলব। আমার মতে দৃষ্টিনান্দনিকতার চেয়ে সহজপাঠ্যতাই অ্যাম্বিগ্রামের গুণগত মানের নির্ধারক। যে অ্যাম্বিগ্রামের মর্মোদ্ধার করতে চুলচেরা বিশ্লেষণ করতে হয় তা দেখতে যতই ভালো হোক, আদৌ ভালো অ্যাম্বিগ্রাম নয়।
উদাহরণ দিয়ে বলি।

এটা দেখতে ভালো। আমার চেনাশোনা অনেকেই এটা পছন্দ করেছেন। কিন্তু বোঝা যাচ্ছে কী লেখা? বলে দেওয়ার পরে অবশ্য সঙ্গীত লেখাটা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে। বলে না দিলে যেহেতু মর্মোদ্ধার করা যাচ্ছে না, তাই এটা ভালো নকশা হলেও ভালো অ্যাম্বিগ্রাম নয়।
এবার আরেকটা।

খানিকক্ষণ মন দিয়ে তাকিয়ে থাকলে হয়ত বোঝা যাবে যে সুহান লেখা।
কিংবা এটা।

দ্রোহী বোঝা যেতে পারে।
এ দুটো খুব ভালোমানের অ্যাম্বিগ্রাম না হলেও খুব একটা খারাপও নয়।

এবার পরপর কিছু অ্যাম্বিগ্রাম দিবো। সেগুলোর মূল অর্থ দেবো সবার শেষে।








এবার তালিকা দিই।
প্রিয়ন্তী
মুস্তাফিজ
মনজুর
জাহিদ
মানিক
হাসিব
ধুসর গোধূলী [বানানের ভুলটা ইচ্ছাকৃত]

যে অ্যাম্বিগ্রামগুলো প্রথম দেখাতেই ঠিকঠাক পড়া গেল সেগুলোই আসলে অ্যাম্বিগ্রাম বলার যোগ্য। বাকিগুলো বাতিল।

এলোদাগ

কিছু হুটহাট আঁকা। হাতের কাছে যা ছিলো তাই দিয়ে।

মোমরঙ দিয়ে আমার প্রতিকৃতি

এটাও আমি। রঙপেন্সিলে।

এটা এক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার। মোমরঙে করে ফটোশপ।

কলম আর সাইনপেনে।

হাতের কাছে গোলাপি পেন্সিল ছিলো না। তাই সত্যিকারের লিপগ্লস দেওয়া হয়েছে ঠোঁটে।

আলুজাত এক পণ্যের জন্য খসড়া নকশা। সাইনপেনে করা।

অফিসে বসে ডায়েরির মলাটে পার্মানেন্ট মার্কারে আঁকা। পরে রঙ করা।

অ্যাক্রেলিক কালার দিয়ে মগের ভোলবদল।

জি-পেনে হাতেখড়ি

আঁকিয়ে বন্ধুদের দেখাদেখি জি-পেন কিনলাম খুব উৎসাহ নিয়ে। প্রথম সপ্তাহের অপকর্ম।

জিপেন কিনে আহ্লাদে আটখানা

রাতজাগা পেঁচা

বন্ধুর বাগানের টিউলিপের ছবি দেখে আঁকা

 জন্মদিনে উইশের বৃষ্টি


 মাছিটা খুব জ্বালাচ্ছিলো

লুল ইমো

ডায়েট!

বন্ধুর ভাগনি

বন্ধু পলাশ


কাদার পুতুল

নেহাত শখের বশেই পলিমার ক্লে নিয়ে নাড়াচাড়া শুরু করেছিলাম। তার অপরিণত ফসল এগুলো।




লোগোটোগো

এক আধটু আঁকার অভ্যাস থাকার সুবাদে বন্ধুদের টুকিটাকি কাজ করে দেওয়া হতো।

বুয়েটের ইইই ০৩ ব্যাচের Level:4, Term:1-এর শেষদিনে "EEE '03 A section"-এর জন্য তৈরি লোগো। লোগোর মধ্যে EEE'03 A লেখাটা আছে।


২০০৯-এর শেষভাগে এক বন্ধুর অনুরোধে টিশার্টের ডিজাইন করেছিলাম অস্ট্রেলিয়ায় আর্টসেলের অনুষ্ঠিতব্য কনসার্ট উপলক্ষ্যে।

সামনে

পেছনে





'আকাশলীনা' এক বন্ধুর মেয়ের নাম। তার নামে বন্ধুর প্রতিষ্ঠানের নাম। তার লোগো।



এক আপুর অনলাইন গয়নার দোকানের লোগো। দোকানের নাম নীল ওপাল



এক ফটোগ্রাফার বন্ধুর ফটোগ্রাফ সিগনেচার।


ক্যালিফোর্নিয়ায় একুশে ফেব্রুয়ারি উপক্ষ্যে আমার স্কুলমেট ও তার বন্ধুদের আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য করা কার্ডের খসড়া এটা।

হারানো ইলাস্ট্রেশন

বিশ্ববিদ্যালয়জীবনে 'টাটকা' নামে আমাদের একটা ফান ম্যাগাজিন ছিলো যার অলংকরণে আমার অংশগ্রহণ ছিলো। বেশিরভাগ হাতেই এঁকে দিতাম। কম্পিউটারে তখনো সড়গড় হইনি। তাও এক সংখ্যায় মাইক্রোসফট পেইন্ট আর খানিকটা ফটোশপ দিয়ে একেবারেই আনাড়ি হাতের কিছু কাজ করেছিলাম।