ড্যান ব্রাউনের কল্যাণে অ্যাম্বিগ্রামের সাথে অনেকেই পরিচিত। Ambigram শব্দটি ambi (উভয়) ও gram (আঁকা) শব্দ দুটির সমন্বয়ে গঠিত। নাম থেকেই এর স্বভাব সম্পর্কে ধারণা করা যায়। অ্যাম্বিগ্রাম হলো টাইপোগ্রাফের একটা বিশেষ পদ্ধতি যার মাধ্যমে একই শব্দকে ভিন্ন ভিন্ন আঙ্গিকে বা ভিন্ন ভিন্ন অর্থে প্রকাশ করা যায়। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে ১৮০ ডিগ্রি ঘোরালেও যে শব্দের রূপ অপরিবর্তিত থাকে তা-ই অ্যাম্বিগ্রাম হিসেবে জনপ্রিয়। যেমন- ambigram শব্দটিরই এই অ্যাম্বিগ্রাম দুটি-
আমার আগ্রহ বাংলা অ্যাম্বিগ্রামে। বাংলা বর্ণমালা বহুমাত্রিক। এতে মাত্রাসহ আর মাত্রাবিহীন বর্ণ যেমন আছে, তেমনি এর আকৃতিবিন্যাসও আলাদা। কারচিহ্নগুলো কখনো সামনে, কখনো নিচে, কখনো উপরে, কখনো নিচে বসে। অ্যাম্বিগ্রামে যেখানে প্রতিসাম্য (symmetry) মৌলিক বৈশিষ্ট্য, সেখানে বাংলা বর্ণমালা নিয়ে কাজ করাটা বাড়তি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। আর মজাটা সেখানেই। আমার করা পছন্দের কিছু অ্যাম্বিগ্রাম নিয়ে এখানে কথা বলব। আমার মতে দৃষ্টিনান্দনিকতার চেয়ে সহজপাঠ্যতাই অ্যাম্বিগ্রামের গুণগত মানের নির্ধারক। যে অ্যাম্বিগ্রামের মর্মোদ্ধার করতে চুলচেরা বিশ্লেষণ করতে হয় তা দেখতে যতই ভালো হোক, আদৌ ভালো অ্যাম্বিগ্রাম নয়।
উদাহরণ দিয়ে বলি।
এটা দেখতে ভালো। আমার চেনাশোনা অনেকেই এটা পছন্দ করেছেন। কিন্তু বোঝা যাচ্ছে কী লেখা? বলে দেওয়ার পরে অবশ্য ‘সঙ্গীত’ লেখাটা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে। বলে না দিলে যেহেতু মর্মোদ্ধার করা যাচ্ছে না, তাই এটা ভালো নকশা হলেও ভালো অ্যাম্বিগ্রাম নয়।
এবার আরেকটা।
খানিকক্ষণ মন দিয়ে তাকিয়ে থাকলে হয়ত বোঝা যাবে যে ‘সুহান’ লেখা।
কিংবা এটা।
‘দ্রোহী’ বোঝা যেতে পারে।
এ দুটো খুব ভালোমানের অ্যাম্বিগ্রাম না হলেও খুব একটা খারাপও নয়।
এবার পরপর কিছু অ্যাম্বিগ্রাম দিবো। সেগুলোর মূল অর্থ দেবো সবার শেষে।
এবার তালিকা দিই।
প্রিয়ন্তী
মুস্তাফিজ
মনজুর
জাহিদ
মানিক
হাসিব
ধুসর গোধূলী [বানানের ভুলটা ইচ্ছাকৃত]
যে অ্যাম্বিগ্রামগুলো প্রথম দেখাতেই ঠিকঠাক পড়া গেল সেগুলোই আসলে অ্যাম্বিগ্রাম বলার যোগ্য। বাকিগুলো বাতিল।